জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারে নিজ কক্ষ থেকে এক নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কক্ষের দরজা ভেঙে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষিণকভাবে কোনো ধারণা দিতে পারেনি পুলিশ।
মারা যাওয়া চিকিৎসকের নাম সুলতানা পারভীন (৩৭)।তিনি মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তাঁর বাড়ি রাজশাহী জেলায় সদর উপজেলার পোস্টাল অফিসের গলি এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আজাদের মেয়ে।ছয় মাস ধরে সুলতানা পারভীন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন।
তবে ছুটি কাটিয়েছেন তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি আবাসিক এলাকায় নিজের ফ্ল্যাটে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।সুলতানা পারভীন অবিবাহিত ছিলেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারের ওই কক্ষে তিনি একাই থাকতেন।
পুলিশ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, শনিবার রাত নয়টা থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত সুলতানা পারভীনকে কেউ দেখেননি। সকাল থেকে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও যাননি।
বিকেলের দিকে সবার সন্দেহ হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফজলুল হকসহ কয়েকজন চিকিৎসক ওই কোয়ার্টারে যান।
তাঁরা কক্ষের দরজায় অনেক ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ কক্ষের দরজা ভেঙে ওই চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করে।
মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক মুঠোফোনে ঢাকা ১৮.কে বলেন, তাঁর সাপ্তাহিক ছুটি ছিল।
তবে তিনি জামালপুর শহরের বেসরকারি হজরত শাহজামাল (রহ.) জেনারেল হাসপাতালে রোগী দেখেছেন।
রাত নয়টার দিকে ওই হাসপাতালের গাড়িতে করে তাঁকে কোয়ার্টারে নামিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁকে আর কেউ দেখেননি।
মো. ফজলুল হক বলেন, আজ সন্ধ্যায় কক্ষের দরজা ভেঙে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। তাঁর লাশ বিছানার ওপর পড়ে ছিল। মুখমণ্ডল অনেক কালো ছিল।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম খান ঢাকা ১৮.কে বলেন, কক্ষের দরজা ভেঙে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে ওই চিকিৎসকের লাশ বিছানায় পড়ে থাকা অবস্থায় পায়।
পুলিশ তার কক্ষ থেকে ৫টি প্যাথিডিন, একটি সিরিঞ্জ, একটি নোটবুক এবং দুটি চিঠি উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, তার ডায়েরি থেকে জানা গেছে সাব্বির নামে এক ছেলের সঙ্গে তার সর্ম্পক ছিল। ছেলেটি অন্য মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকে সুলতানা পারভীন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ঢা/মমি